Header Ads

শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ-মৌলভীবাজার, সিলেট ২০১৯, Sreemangal tour 2019, শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ খরচ, কম খরচে শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ, শ্রীমঙ্গল ট্যুর প্ল্যান, শ্রীমঙ্গল হোটেল ভাড়া, শ্রীমঙ্গল ঘুরার জায়গা


শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ - মৌলভীবাজার, সিলেট


মৌলভীবাজার, সিলেট


শীতের শুরুতেই পর্যটকরা ভিড় করতে শুরু করেছে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। পাহাড়ের কোলঘেঁষা সবুজময় শতবর্ষী চা বাগান যেনো প্রকৃতির অনন্য রূপ।

ছোট বড় উঁচু-নিচু টিলা আর হরেক রকম গাছ-গাছালি। টিলার পাশ দিয়ে আঁকাবাঁকা সড়ক। সড়কের কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। যেনো দেশের ভেতর অন্যরকম এক দেশ। চায়ের দেশ, মেঘের দেশ, বন-বনানী, টিলা আর হাওরের দেশ শ্রীমঙ্গল। যেখানে বাস করে অনেকগুলো নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষ।


শ্রীমঙ্গলের বৈচিত্র্যময় এসব স্থান দেখতে দূরদেশ থেকেও পর্যটকরা ছুটে আসেন। দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ি ছড়া, চা বাগান, বনাঞ্চল, নীল জলরাশির হাওর সমৃদ্ধ শহর শ্রীমঙ্গল অপরূপ সৌন্দর্যেরই লীলাভূমি। এখানে চাবাগানই সাধারণ ভ্রমনার্থীদের কাছে সবচেবড় আকর্ষণ। ছোট-বড় মিলিয়ে উপজেলায় চা-বাগান ৩৮টি।এর মাঝে অনেকগুলোই শতবর্ষী।

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল যাবেন অথচ সাত রং চায়ের স্বাদ নেবেন না, তা কী করে হয়! একই গ্লাসের মধ্যে স্তরে স্তরে সাজানো সাত রং চা! তরল পানীয়কে কীভাবে সাত স্তরে সাজানো সম্ভব! ব্যাপারটি বিস্ময়েরই বটে। অর্ডার করলে গোপন ঘরে প্রস্তুত তৈরির পর সেই চা আপনাকে পরিবেশন করা হবে। প্রতি কাপের মূল্য ৭০-৯০ টাকা।


একনজরে শ্রীমঙ্গল :-


ভ্রমণ স্থানের নাম :-  শ্রীমঙ্গল
অবস্থান        :- মৌলভীবাজার, সিলেট
অবস্থিত                  :-  বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে
আয়তন                  :-  ৪২৫.১৫ বর্গকিলোমিটার
চা-বাগানের আয়তন        :-  ১৮৪.২৯ বর্গকিলোমিটার
মোট চা বাগানের সংখ্যা :-  ৪০টি
ঢাকা থেকে দূরত্ব    প্রায়     :-        ২০০কি.মি.

Sreemangal

কীভাবে যাবেন


ঢাকা থেকে বাসে অথবা ট্রেনে যাওয়া যায় শ্রীমঙ্গল। তবে বাসে যদি যান, রাস্তা ফাঁকা থাকলে ট্রেনের আগেই পৌঁছাবেন।



1.  ঢাকা হতে রেলপথে শ্রীমঙ্গল পৌছে, শ্রীমঙ্গল হতে সড়ক পথে মৌলভীবাজার জেলায়আসা যায়

2.  নৌ এবং আকাশ পথে ঢাকা হতে মৌলভীবাজার জেলায় সরাসরি পৌছাবার   কোন ব্যবস্থা নেই।

3.  আকাশ পথে ঢাকা হতে সিলেট এসে, তারপর সিলেট হতে সড়ক পথে মৌলভীবাজারে আসা যায়

 ঢাকা হতে মৌলভীবাজার জেলায় নিম্নলিখিত যানবাহন চলাচল করেঃ


)  বাস
)  ট্রাক
)  লরী
)   ট্যাংকার
)   মাইক্রোবাস
)   মিনিবাস
)  কার
)  জীপ


বাসের সূচি :-


ঢাকা-মৌলভীবাজার :-

  • ঢাকা-মৌলভীবাজার রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহণে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ

    • এসি বাসে - ৮০০ টাকা এবং
    • নন-এসি বাসে - ৩৫০ টাকা।

  • সরাসরি চলাচলকারী পরিবহণগুলোর তথ্য পেতে যোগাযোগ করতে হবেঃ

    • হানিফ এন্টারপ্রাইজ - মোবাইলঃ ০১৭১১-৯২২ ৪১৭;
    • শ্যামলী পরিবহন - মোবাইলঃ ০১৭১১-৯৯৬ ৯৬৫;
    • সিলেট এক্সপ্রেস - মোবাইলঃ ০১৭১৩-৮০৭ ০৬৯;
    • মৌলভীবাজার সিটি - মোবাইলঃ ০১৭১৬-২৯১ ১১২;
    • টিআর ট্রাভেলস - মোবাইলঃ ০১৭১২-৫১৬ ৩৭৮;
    • রূপসী বাংলা - মোবাইলঃ ০১৭১৩-৮০৭ ০৬৯;
    • তাজ পরিবহন - মোবাইলঃ ০১৭১৬-৩৮৭ ৯৩১।

পরিবহনের নাম
যোগাযোগ
ভাড়া
সোহাগ পরিবহন
৯৩৩১৬০০ (ফকিরাপুল)
৯১৩২৩৬০ (কমলাপুর)
৯১৩২৩৬০ (কল্যাণপুর)
৭১০০৪২২ (আরমবাগ)
,১০০/- (এক্সিকিউটিভ)
৯০০/- (রেগুলার)
আল-মোবারকা
ফোন: ৭৫৫৩৪৮৩, ০৪৪৭৭৮০৩৪২২
মোবাইল: ০১৭২০-৫৫৬১১৬,
০১৮১৯-১৮৩৬১১, ০১৭১৫-৮৮৭৫৬৬
৮০০/- (এসি)
৩৫০/- (নন-এসি)
গ্রীণ লাইন
৭১৯১৯০০ (ফকিরাপুল)
০১৭৩০-০৬০০৮০ (কল্যাণপুর)
,১০০/- (স্ক্যানিয়া)
৮৫০/- (ভলবো)
সৌদিয়া পরিবহন
০১৯১৯-৬৫৪৮৫৬ (সায়েদাবাদ )
০১৯১৯-৬৫৪৮৫৭ (সায়েদাবাদ )
০১৯১৯-৬৫৪৭৫২ (সায়েদাবাদ )
০১৯১৯-৬৫৪৮৫৮ (ফকিরাপুল)
,১০০/- (এসি)
৪৪০/- (নন-এসি)
হানিফ এন্টারপ্রাইজ
০১৭১৩-৪০২৬৬১ (কল্যাণপুর)
৪৫০/- (নন-এসি)
শ্যামলী পরিবহন
৯০০৩৩১, ৮০৩৪২৭৫ (কল্যাণপুর)
৪৫০/- (নন-এসি)
ইউনিক পরিবহন
৯০০৮৩২৬, ০১৮২১৪৯৮৮৩৩, ০১১৯৩০৯১১২০ (কল্যাণপুর)

৪৪০/- (নন-এসি)
মামুন পরিবহন
৭৫৪৫৩১৭, মোবাইল:০১৭১১-৩৩৭৮৫১, ০১৭১৮-৪৩৮৭৩২, ০১৯১২-০৬৪০৩২ (সায়েদাবাদ)
৩০০/- (নন-এসি)




ট্রেনের সময়সূচি :--


ট্রেনেরনাম
ছাড়ে
পৌঁছে
বন্ধ
সময়
শ্রেনী
ভাড়া
জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস
শ্রীমঙ্গল
ঢাকা
বৃহস্পতি
০৯:২১
এসি সীট
প্রথম সীট
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
৩৪৫.০০
২০০.০০
২০০.০০
১৩৫.০০
পারাবতএক্সপ্রেস
শ্রীমঙ্গল
ঢাকা
মঙ্গল
১৬:৪৮
স্নি»v
প্রথম সীট
শোভন চেয়ার
৩৪৫.০০
২০০.০০
২০০.০০
উপবনএক্সপ্রেস
শ্রীমঙ্গল
ঢাকা
.........
০০:১২
এসি বার্থ
প্রথম বার্থ
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
৫২৬.০০
৩২৫.০০
২০০.০০
১৩৫.০০
পাহাড়িকাএক্সপ্রেস
শ্রীমঙ্গল
চট্টগ্রাম
শনি
১২:৩৬
স্নি»v
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
শোভন
৪২০.০০
২৫০.০০
১৬৫.০০
১৫০.০০
উদয়নএক্সপ্রেস
শ্রীমঙ্গল
চট্টগ্রাম
রবি
২৩:১১
স্নি»v
প্রথম বার্থ
শোভন চেয়ার
শোভন
৪২০.০০
৩৯৫.০০
১৬৫.০০
১৫০.০০
জয়ন্তিকাএক্সপ্রেস
ঢাকা
শ্রীমঙ্গল
.........
১৮:৪৪
এসি সীট
প্রথম সীট
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
৩৪৫.০০
২০০.০০
২০০.০০
১৩৫.০০
পারাবাতএক্সপ্রেস
ঢাকা
শ্রীমঙ্গল
মঙ্গল
১০:৫২
স্নি»v
প্রথম সীট
শোভন চেয়ার
৩৪৫.০০
২০০.০০
২০০.০০
উপবনএক্সপ্রেস
ঢাকা
শ্রীমঙ্গল
বুধ
০২:৫০
এসি বার্থ
প্রথম বার্থ
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
৫২৬.০০
৩২৫.০০
২০০.০০
১৩৫.০০
পাহাড়িকাএক্সপ্রেস
চট্টগ্রাম
শ্রীমঙ্গল
সোম
১৪:২৮
স্নি»v
প্রথম চেয়ার
শোভন চেয়ার
শোভন
৪২০.০০
২৫০.০০
১৬৫.০০
১৫০.০০
উদয়নএক্সপ্রেস
চট্টগ্রাম
শ্রীমঙ্গল
রবি
০৩:২৭
স্নি»v
প্রথম বার্থ
শোভন চেয়ার
শোভন
৪২০.০০
৩৯৫.০০
১৬৫.০০
১৫০.০০
তথ্যসূত্র : স্টেশন মাষ্টার, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।




মৌলভীবাজার জেলা হতে বিভিন্ন জেলার দুরত্ব:

জেলার নাম
মৌলভীবাজার
দুরত্ব(কিঃমিঃ)
ঢাকা
২১০
সিলেট
৬৫
সুনামগঞ্জ
১২৬
হবিগঞ্জ
৬৫
বি-বাড়িয়া
১২৪
বরিশাল
৪৮৭
বগুড়া
৪৩৯
চট্টগ্রাম
৩৬৪
দিনাজপুর
৬২৪
ফরিদপুর
৩৫৫
যশোর
৪৮৪
খুলনা
৫৪৫
কুষ্টিয়া
৪৮৭
ময়মনসিংহ
৪০৩
পাবনা
৩৭১
রাজশাহী
৪৮০
রংপুর
৫৪৫
কুমিল্লা
১৯৭
নোয়াখালী
২৯২
রাঙামাটি
৪৪০
তথ্যসূত্র : বিআরটিএ, মৌলভীবাজার।




হোটেল আবাসনের তালিকা :--



ক্রমিক
নাম
পরিচালনাকারী/মালিকের নাম
হোটেল/মোটেল/রেস্তোরাঁ/রেস্ট হাউজ/গেস্ট হাউজ/ডাকবাংলো ইত্যাদির ঠিকানা
মোবাইল নং

হোটেল আবাসনের ধরণঃ বেসরকারী
এক্সারসন এন্ড রিসোর্টস বাংলাদেশ লিঃ
রাধানগর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
০১৭৩০৭৯৩৫৫২৯
পরিচালক, ওয়েস্টার্ণ প্লাজা (আবাসিক)
ওয়েস্টার্ণ প্লাজা (আবাসিক), ২০৯ সেন্ট্রাল রোড, মৌলভীবাজার।
০১৭১১-৩৯৩৪৯৯
পরিচালক, রেস্ট ইন হোটেল (আবাসিক)
রেস্ট ইন হোটেল (আবাসিক), এস আর প্লাজা এম সাইফুর রহমান রোড, মৌলভীবাজার।
০১৭১৫-২৭৪৮৪৯
পরিচালক, নিসর্গ নীরব ইকো কটেজ
নিসর্গ নীরব ইকো কটেজ রাধানগর, শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার।
০১৭৬৬৫৫৭৭৮০
পরিচালক, হোটেল শাফী (আবাসিক)
পুরাতন হাসপাতাল রোড মৌলভীবাজার।
০১৭২২৬৩০৪৭৭
পরিচালক, হোটেল সন্ধ্যা (আবাসিক)
নতুনবাজার শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
০১৭১১-৯৭৭০৭৬
পরিচালক, হোটেল সোনার বাংলা (আবাসিক)
সৈয়দ কুদরত উল্লা সড়ক, মৌলভীবাজার।
০১৭১২-৩২২৪৭১
পরিচালক, রাজা রেষ্ট হাউস (আবাসিক)
২৩৮ সেন্ট্রাল রোড মৌলভীবাজার।
০১৬৭০-৮০৮১৮২
পরিচালক, হোটেল আল রহমান (আবাসিক)
হবিগঞ্জ রোড শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার।
০১৬৮০-০৩৬৫৫৫
১০
পরিচালক, হোটেল নিদশোভা (আবাসিক)
সিলেট রোড, মৌলভীবাজার।
০১৭১৭-৭৩২৩৭০
১১
পরিচালক, হোটেল পাপড়িকা (আবাসিক)
সিলেট রোড মৌলভীবাজার
০১৭১৪-৬০৯৮৭৩
১২
পরিচালক, হোটেল মুন (আবাসিক)
নতুনবাজার শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার।
০১৭১২-৬৩৮৫৩৯
১৩
পরিচালক, নিসর্গ লিচুবাড়ী ইকো কটেজ
রাধানগর শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার
০১৭৬৬৫৫৭৭৮০
১৪
পরিচালক, হোটেল স্কাইপার্ক
ইয়াকুব শপিং সেন্টার চৌমুহনী শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার
০১৭১৩২৭০২১২
১৫
পরিচালক, টি ভিলা লাক্সারী রিসোর্ট
মাজদিহি, ভৈরবগঞ্জবাজার, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
০১৭১৬৮৩৩৬৩৩
১৬
পরিচালক, হার্মিটেজ (গেষ্ট হাউস)
রাধানগর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
০১৭১১-৫৯৫২৬৫
১৭
পরিচালক, বেঙ্গল ফুড এন্ড হাইওয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট
শ্রীমঙ্গল রোড মৌলভীবাজার
০১৭১৫৬০০৪৪১
১৮
পরিচালক, সু্ইট ফুড বেঙ্গল ফুড
শ্রীমঙ্গল রোড, মৌলভীবাজার
০১৭১২৪৬৪৫২৫
১৯
পরিচালক, রাধিকা মোহন ষ্টল
সেনট্রাল রোড চৌমোহনা, মৌলভীবাজার
০১৭১২১৯৮৪১৯
২০
পরিচালক, সুমা ফুড
সিলেট রোড কুসুমবাগ, মৌলভীবাজার
০১৭৬৪৮৫১৫৮৬


কী খাবেন


শ্রীমঙ্গলে খাবারের খরচ অনেক কম। প্রায় সব ধরনের রেস্তোরাঁই রয়েছে শহরে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হিসেবে রয়েছে সাত রঙের চা। মাধবকুণ্ড, হাকালুকি এবং লাউয়াছড়ায় ভাত, ডাল, মুরগির মাংস, হাঁসের মাংসের সঙ্গে মজাদার খাবার হিসেবে পাওয়া যায় বকের মাংস।


শ্রীমঙ্গল দর্শনীয় স্থান সমূহ :--


1.       বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট।
2.       বাংলাদেশ চা বোর্ড প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট।
3.       ৪০ টি চা বাগান।
4.       লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
5.       নির্মাই শিববাড়ী।
6.       বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জি।
7.       হাইল হাওরে বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম।
8.       সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা।
9.       কাছারী বাড়ী। (সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয় সংলগ্ন)
10.   মসজিদুল আউলিয়া
11.   রমেশ রাম গৌড় এর কালারের চা
12.   শ্যামলী পর্যটন
13.   মাধবপুর লেক
14.   রাবার বাগান
15.   আনারস বাগান
16.   লেবু বাগান
17.   ভাড়াউড়া লেক
18.   রাজঘাট লেক
19.   মাগুরছড়া গ্যাসকূপ
20.   পান পুঞ্জি
21.   ওফিং হিল
22.   বার্নিস টিলার আকাশ ছোয়া সবুজ মেলা
23.   শ্রীমঙ্গলের এক মাত্র ঝর্ণা ‘‘যজ্ঞ কুন্ডের ধারা’’
24.   শতবর্ষের স্মৃতি বিজড়িত শ্রীমঙ্গলে ডিনস্টন সিমেট্রি
25.   মসজিদুল আউলিয়া
26.   টি রিসোর্ট
27.   আরোগ্য কুঞ্জ
28.   হরিণছড়া গলফ কোর্ট
29.   ডলু বাড়ি টিপরা পল্লী
30.   উচু-নিচু পাহাড়



বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট :-

Sreemangal

চায়ের রাজ্যখ্যাত সবুজ শ্যামলে ঘেরা শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর প্রধান কার্যালয়। ১৯৫৭ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শুরু থেকেই বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনষ্টিটিউটটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।  বৈজ্ঞানিক গবেষনার মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীলতা গুনগত মান বৃদ্ধি, চা শিল্পের উন্নয়ন উৎকর্ষে বিজ্ঞান ভিত্তিক পরামর্শ সহায়তা দান এবং গবেণালব্ধ প্রযুক্তি চা শিল্পে বিস্তার করাই প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য।
বর্তমানে ইনষ্টিটিউট ১২ টি জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবেও পরিগনিত। ইনষ্টিটিউট যাবৎ উচ্চ ফলনশীল আকর্ষনীয় গুনগতমান সম্পন্ন ২০টি ক্লোন ৫টি বীজজাত উদ্ভাবন করেছে। ইনষ্টিটিউটের পরিচালক কারিগরি প্রশাসনিক প্রধান।
বর্তমানে টি গবেষণা বিভাগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বৈজ্ঞানিক জ্ঞান চা শিল্পে বিস্তার বাস্তবায়নে চা শিল্পের অগ্রগতি উন্নয়নে প্রবহমান অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।



লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান :-

Sreemangal

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান  বাংলাদেশে  অবশিষ্ট  চিরহরিৎ বনের একটি উল্লেখযোগ্য নমুনা। এটি একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বাংলাদেশের ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য  ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে এটি অন্যতম।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে যেখানে উঁচু নিচু পাহাড়ের গায়ে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার প্রজাপতির লাখ লাখ বৃক্ষ ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশ করা মাত্রই আপনি দেখবেন চারিদিকে হাল্কা অন্ধকার রাস্তায় দুপাশের বৃক্ষগুলো দিবাকরের আলোক রশ্মিকে আটকে রেখেছে , মাঝে মাঝে বৃক্ষসারির মগডালে চোখ রাখুন দেখবেন বানর আর হনুমান লাফালাফি করছে
এতটু ভেতরে প্রবেশ করলে আপনার চোখে পড়বে খাটাস , বনমোরগ , উল্লুক , মেছোবাঘ বন বিড়ালসহ বিভিন্ন জীবজন্তু আর পার্কের বিশাল বিশাল বৃক্ষরাজি,জীবজন্তুর হুঙ্কার, ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ, বানরের লাফালাফি, ঝাঁকঝাঁক উল্লুকের ডাকাডাকি একটু সময়ের জন্য হলেও আপনার ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করে মনে এনে দেবে প্রশান্তির ছোঁয়া


বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম, শ্রীমঙ্গল :-

শ্রীমঙ্গল

বাইক্কা বিলঢাকা থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে মৌলভীবাজার জেলার প্রখ্যাত চা-সমৃদ্ধ শহর শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওড়ের পূর্বদিকের প্রায় ১০০ হেক্টর  আয়তনের একটি জলাভূমির নাম  জুলাই ২০০৩  তারিখে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় এই বিলটিকে মৎস্য সম্পদের একটি অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।
আইড়, কই, মেনি, ফলি, পাবদাসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছ এখানে বংশবৃদ্ধি করে পুরো হাওড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিল মাছের জন্যেই শুধু নয়, পাখি এবং অন্যান্য অনেক প্রাণীর জন্যও একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল।
এটি একটি নয়নাভিরাম জলাভূমি যেখানে হাজারো শাপলা আর পদ্ম ফুল ফোটে। এছাড়া এই বিলের বুনো বাসিন্দা আর শীতে আগত পরিযায়ী পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।



সাত রঙের চা  :-

Sreemangal

সাত রং চা হচ্ছে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় উষ্ণ পানীয়। চায়ের এই স্বাদ নিতে চা প্রেমীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন। শরবত-মিষ্টি স্বাদ থেকে শুরু করে ঝাঁঝালো লবঙ্গ সহ প্রতিটা স্তরের আলাদা আলাদা স্বাদ রয়েছে এবং বর্ণের দিক থেকে রংধনুর মতো বর্ণীল। সাত রং চা নীলকণ্ঠ টি কেবিনে পাওয়া যায়, একটি বিখ্যাত চায়ের দোকান, যা শ্রীমঙ্গল, সিলেট অবস্থিত। রমেশ রাম গৌড় হচ্ছেন এই সাত রং চায়ের উদ্ভাবক।

বর্তমানে, নীলকণ্ঠ টি কেবিনের স্বত্বাধিকারী, রমেশ রাম গৌড়ের দুটি দোকান রয়েছে। একটি শ্রীমঙ্গলের রামনগর মনিপুরী পাড়ায় অবস্থিত (যা নীলকণ্ঠ- নামে পরিচিত), এটি সর্বপ্রথম এবং পুরাতন শাখা; যখন অন্যটা ১৪ রাইফেল ব্যাটালিয়ন সেন্টার, কালীঘাট, শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত; এটা সাধারণত নীলকণ্ঠ- নামে পরিচিত। এটি হচ্ছে নতুন শাখা। নীলকণ্ঠের এই দোকান সমূহ সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে প্রতিদিন রাত ৮টা পর্যন্ত সেবা দিয়ে যায়।
নীলকণ্ঠে এখনো ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু হয়নি, ফলে দর্শনার্থীদের নগদ টাকা সঙ্গে রাখতে হবে।


মাধবপুর লেক :-

Sreemangal

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মাধবপুর চা বাগানে লেকটির অবস্থান। এটি শ্রীমঙ্গল থেকে ১৫ কিঃমিঃ পুর্বে  অবস্থিত। মাধবপুর লেকের ঝলমল পানি, ছায়াসুনিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের উপস্থিতি মনোমগ্ধকর করে তুলে। লেকে নিচে রয়েছে হাজার হজার জীবন্ত গাছ। শত বছর আগে পাহাড়ী পানি জমে এর সৃষ্টি। ব্রিটশ আমলে ইংরেজরা সেখানে বাঁধ  দিয়ে পানি আটকায় এবং সে পানিতে তারা স্পীড বোট নৌকা চড়তো
শত বছর আগেই ব্রিটশরা স্থানে বিনোদনের খোড়াক মেটাতো। ১৯৬৭ এবং ১৯৬৯ সালে লেকের বাঁধ ভেঙ্গে সব পানি চলে গিয়েছিল। পরর্বতীতে পাঞ্জাবী এক বাগান ব্যাবস্থাপক পাথর এনে শক্ত করে  এখানে বাঁধ দেন এর পর থেকে আর বাঁধ ভাঙ্গেনি। এখানে রয়েছে ১০/১২ কেজি ওজনের বড় বড় মাছ। শ্রীমঙ্গল পরিবেশবিদ সিতেশ রঞ্জন দেব ব্যাক্তি উদ্যোগে লেকে হাজার হাজার মাছের পোনা অবমুক্ত করেছেন।


রাবার বাগান :-

Sreemangal

রাবার বাগান এগুলো সিলেট বিভাগের ঐতিহ্য। দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসেন এসব বাগান দর্শন করতে। দুর্গম পাহাড় পাড়ি দিয়ে এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করার পর বিশ্রাম নেয়া আর রাত কাটানোর জন্য যখন পর্যটকরা একটি ভাল জায়গা খুঁজতেন তখন তাদেরকে হতাশ হতে হত। তবে এখন আর সেই হতাশা নেই। হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী পাহাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা তারকা হোটেল দি প্যালেস রিসোর্ট এন্ড স্পা সবাইকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সবুজে ঘেরা পাহাড়, গিরিখাদ, সরোবর, ঝরনা আর ৩০ হাজার গাছে ঢাকা ১৫০ একর ভূমিকে এমনভাবে সাজনো হয়েছে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না এতটুকু খুত। আর চারিদেকে চা বাগান, আর রাবার বাগান ...
বাগানটির অন্যতম সৌন্দর্য হলো এটি একেক ঋতুতে একেক রকম সাজে সজ্জিত হয়। শীতকালে গাছের সব পাতা ঝরে গিয়ে যেমন রিক্ত হয়, তেমনি বর্ষায় ফিরে পায় নতুন যৌবন। কিছুদূর এগিয়েই চোখে পড়ে বাগানের অফিস।
বাহুবল উপজেলার রাবার বাগনের আয়তন ১৯৬৩.২২ একর এবং  মোট উৎপাদন লক্ষ কেজি
বাহুবল বাজার থেকে সড়কপথে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দিয়ে সিলেট যাওয়ার পথে পুটিজুরী স্থানটি পাওয়া যায়



আনারস বাগান :-

Sreemangal

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করতেই চোখ পড়বে আনারসের বাগান , আনারস গাছগুলো নিচ থেকে টিলার উপবে এমন ভাবে গিয়ে  উঠেছে দূর থেকে মনে হবে যেন একদল পিপিলিকা (ডানা মেলে ) সারি বেঁধে উপরে উঠছে উঠে আসুন একেবারে চূড়ায় যতোটুকু চোখ যায় দেখবেন টিলার পর টিলা শুধু আনারস আর আনারস , হ্যাঁ মনে রাখবেন কাউকে না বলে আনারস পাড়বেন না
যদি আনারস নিতে চান তাহলে ওখানেই পাবেন আনারস বাগানের পরিচর্যাকারীর সঙ্গে একটু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন দেখবেন সে খুশি হয়েই দুএকটি আনারস আপনার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে কিছু বকশিশ ধরিয়ে দিন এদের হাতে কারণ এরা খুব গরিব , হয়তো নিতে চাইবে না তবু চেষ্ট করুন

লেবু বাগান :-


খুব ভোর উঠে শ্রীমঙ্গল বাজারে যদি যান , তাহলে দেখবেন শুধু লেবু আর লেবু নিজের চোখকেই অবিশ্বাস্য মনে হবে এতো লেবু শ্রীমঙ্গলে  জম্মে শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে শত শত লেবু বাগান খুব ভোর থেকেই জীপ ঠেলা ভর্তি করে লেবু ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে লেবু এনে বাজারে জমা করে
শহর থেকে চা বাগান ধরে যেকোন দিকে  এগুলেই দেখতে পাবেন ছোট ছোট লেবু বাগান , বাগানের কাছে গেলেই আচমকা লেবুর ঘ্রাণ লাগবে আপনার নাকে এখানে সাধারনত /১০ প্রকারের লেবু হয়ে থাকে। যাবার সময় কিছু লেবু কিনে নিয়ে যেতে পারেন। কারন দেশের যে কোন জায়গা থেকে শ্রীমঙ্গলে লেবু সস্তা।  

ভাড়াউড়া লেক :-

Sreemangal

চারদিকে চা বাগান মাঝখানে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে একটি লেক শাপলা গুলি উকি দিয়ে আপনার আগমনের প্রহর গুনছে। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে কলেজ রোড হয়ে সোজা চলে যান ভাড়াউড়া লেকে এখানে যেতে সময় লাগবে রিকশায় ১০ মিনিট দেখবেন শাপলা ফুল পরিপূর্ণ লেকটিতে হরেক রকম পাখির সমাহার লেকের শাপলা ফুলগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে সবুজের মধ্যে লালের ছোঁয়া তবে লেকে যেতে হলে পাহাড়ের গা বেয়ে একটু হেঁটে যেতে হবে হেঁটে চলার পথটি এতোই সুন্দর যে , হাঁটার ক্লান্তি আপনিই ভুলে যাবেন

রাজঘাট লেক :-


লেকটি শহর থেকে একটু দূরে পড়েছে শ্রীমঙ্গল থেকে কালীঘাট কিংবা সিন্দুরখান ২টি রাস্তা হয়েই সেখানে যাওয়া যায় মিশুক, টেম্পো বা জিপে করে গেলে ৩০ মিনিট সময় লাগে বাগানের মধ্যখানেই অবস্থিত লেকটির দিকে চা বাগান একদিকে সুইমিংপুল। লেকটিতে ভরে আছে শাপলা আর জলপদ্মে। লেকের পাশে দাঁড়ান দেখবেন অতিথি পাখিরগুলো আপন মনে লেকের পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এখান থেকে একটু বেলা থাকতেই ফেরা উচিত যদিও ফিরতে মন চাইবে না , কারণ এটি শহর থেকে একটু দূরে পড়েছে

মাগুরছড়া গ্যাসকূপ :-

হাতে সময় থাকলে মাগুরছড়া গ্যাসকূপটিও দেখে আসতে পারেন , ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন এই কূপ খননকালে বিস্ফোরন ঘটে। বিস্ফোরণের দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো আপনার চোখে পড়বে আগুনে পোড়া বৃক্ষগুলো কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে , এটি এশিয়ার সর্ববৃহৎ তেল গ্যাসের খনি গ্যাস কুপের পাশেই রয়েছে মার্কিন কোম্পানী সেভরনের জেরিন চা বাগানে কালাপুরে গ্যাস কুপ অনুমতি নিয়ে   আপনি গ্যাস কূপ গুলোও দেখেযেতে পারেন। তাৎক্ষনিক অনুমতি না নিতে পারলেও বাহির থেকেও কূপ গুলো দেখে যেতে পারেন।

  

শ্রীমঙ্গলের এক মাত্র ঝর্ণা  ‘‘যজ্ঞ কুন্ডের ধারা :-

শ্রীমঙ্গলে এসে শুধু সবুজের ছোয়া নিবেন তাতো হয়না একটু পানির ছল ছল শব্দ শোনাওতো দরকার। তাই চলে যান শহরের কাছা কাছি জাগ ছড়া চাবাগানের  ১৪ নং সেকশনে যজ্ঞ কুন্ডের ধারায়। সেখানে রয়েছে অপরুপ সুন্দর্য সমৃদ্ধ  শ্রীমঙ্গলের একমাত্র ঝর্ণা। যারা ঝর্ণাকে প্রথম দেখবেন তারা অবশ্যই বিষ্মিত হবেন। এটিও ঈশ্বরের অপরুপ একটি সৃষ্টি। ঝর্ণাটি দেখতে আপনি শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মৌলভীবাজার রোড হয়ে কাকিয়া বাজার নেমে ডান দিকে জাগ ছড়া চাবাগানে যাবেন অথবা  শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ভাড়া উড়া চাবাগান হয়ে মেটো রাস্তায় জাগ ছড়া চা বাগানে গিয়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করে আপনি চলে যাবেন জাগছড়ার ১৪নং সেকশনে। সেখানে চোখে পড়বে একটি ব্রীজ। ব্রিজের ডান পাশ দিয়ে ছড়ার পাড় ধরে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই শোনতে পাবেন শা শা শব্দ।


নির্মাই শিববাড়ী :-


শ্রীমঙ্গলের  ঐতিহŠবাহী নির্মাই শিববাড়ী ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে একটি আকর্ষনীয় স্থান। এখানে শিব মন্দিরের পাশেই রয়েছে ৯একর জায়গা জুড়ে বিশাল  একটি দিঘী। দিঘীর চারপাশে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতীর বৃক্ষ সারি। এই দিঘীর পাড়ে বৃক্ষ সারির নিচে বসে আড্ডা কিংবা গল্প করেই আপনি কাটিয়ে দিতে পারেন অনেকটা সময়। নির্মাই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করায় তার নামানুসারে এই শিব মন্দিরের নাম করা হয় নির্মাই শিববাড়ী।


সিতেশ দেবের চিড়িয়াখানা দেশের একমাত্র সাদা বাঘ :-


শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের রামকৃষ্ণ মিশন রোডের একটি দ্বিতল বাড়ি এটিই সিতেশ রঞ্জন দেবের বাসা রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের পাশেই অবস্থিত এই বাড়িটিতেই সিতেশ বাবু তৈরি করেছেন তার মিনি চিড়িয়াখানাটি বাসার বামপাশে দিয়ে ছোট একটি টিনের গেটের ভেতর দিয়ে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে হয় চিড়িয়াখানায় প্রবেশমাত্রই শুরু রাস্তায়ই চোখ পড়বে গুঁইসাপ! দেখবেন আপনার দিকে তেড়ে আসছে। অবশ্য চমকে ওঠার কোনো কারণ নেই, খাঁচার মধ্যেই রাখা হয়েছে জীবটিকে কুমির আকৃতির এই গুঁইসাপের বৈশিষ্ট হলো মুখ দিয়ে থুথু ছুড়ে মারা এরপরই চোখে পড়বে একটি মেছো বাঘ এক সময় প্রচুর পরিমাণে শ্রীমঙ্গলে দেখা যেতো এই বাঘ প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা এবং বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবার জন্য চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত থাকে চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য কোন ফির প্রয়োজন নেই


লাউয়ছড়ায় ভেষজ উদ্ভিদের বাগান :-


লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কেই রয়েছে দেশের পূর্বাঞ্চলের একমাত্র ভেষজ বাগান আরগ্য কুঞ্জ। মাগুর ছড়া গ্যাস কুপ পেরিয়ে প্রায় আড়াই কিলো এগুলেই হাতের ডান দিকে চোখে পড়বে ভেষজ বাগান আরগ্য কুঞ্জ। পার্কের একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ভেষজ বাগানে রয়েছে ৭৯ প্রজাতীর ঔষধী গাছ যার অধিকাংশই আজ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তীর পথে। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে গাছগুলো গায়ে কোন নাম না দেয়াতে গাছের পরিচয় জানতে একটু কষ্ট হবে। আপনি আরগ্য কুঞ্জের বিভিন্ন  ঔষদি বৃক্ষ দেখে বুঝতে পাবেন বাংলাদেশ এক সময় ভেষজ উদ্ভিদের জন্য কত সমৃদ্ধ ছিল?





শতবর্ষের স্মৃতি বিজড়িত শ্রীমঙ্গলের ডিনস্টন সিমেট্রি :-

শ্রীমঙ্গল

শতবর্ষের স্মৃতিবিজড়িত সিমেট্রির অবস্থান  শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. দূরে জেমস ফিনলে টি কোম্পানির ডিনস্টন চা বাগানের ভেতরে। সিমেট্রি এলাকাজুড়ে কোথাও কোলাহল নেই,সুনসান-নিথর নীরবতা। শতাধিক বছর ধরে জেমস ফিনলে চা কোম্পানির এই সিমেট্রি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়ায় চা বাগান প্রতিষ্ঠার পর ১৮৮০ সালে শ্রীমঙ্গলে বৃটিশরা বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু করে। সুদূর বৃটেন থেকে এখানে টি প্ল্যান্টার্সদের আগমন ঘটে। তৎকালীন সময়ে যেসব বৃটিশ এবং তাদের স্ত্রী-পুত্র,স্বজন মারা যান তাদের ডিনস্টন সিমেট্রিতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। পাহাড়ঘেরা চিরসবুজ চা বাগানের মাঝখানে অবস্থিত সিমেট্রিতে বৃটিশদের কবর রয়েছে ৪৬ টি।

মসজিদুল আউলিয়া :-


প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি চায়ের রাজধানী খ্যাত উপজেলা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ।
তুর্কি নকশায় নির্মিত মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ আদায় করতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন অসংখ্য পর্যটক।
মসজিদটির নাম দেয়া হয়েছে মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ:)
জানা যায়, উপমহাদেশ খ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ:) উত্তরসূরি ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ:)
খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ:) এর সাহেবজাদা খাজা টিপু সুলতান মসজিদটি এখানে নির্মাণ করিয়েছেন।
খাজা মোজাম্মেল হক (রহ:) ফাউন্ডেশনের এখানকার সমন্বয়কারী আরমান খান জানান, শ্রীমঙ্গল সদর থেকে প্রায় - কিলোমিটার দূরে বালিশিরা পাহাড়ের মহাজিরাবাদ এলাকায় মসজিদটির অবস্থান।
সমতল থেকে ৭০-৮০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপিত মসজিদটিতে যেতে হয় ১৩৯টি সিঁড়ি পেরিয়ে। প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত মসজিদের চারদিকেই রয়েছে সবুজ পাহাড়।

এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের চার পাশে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে রয়েছে আগর, নাগা মরিচ, কাঠাল, পেয়ারা, কূল বরই, সাগর কলা লিচু সহ বিভিন্ন ফলের বাগান বনের এসব বাগান গুলো নিজ নিজ বৈশিষ্ট নিয়ে শ্রীমঙ্গলের শ্রীর সাথে একাকার হয়ে আছে।


সবশেষে শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ নিয়ে আমার কিছু মতামত দিচ্ছিঃ


১। শ্রীমঙ্গল খুবই সুন্দর জায়গা।

২। এখানের প্রায় সবাই ভালো মন মানসিকতার।

৩। পাহাড়ে উঠার সময় সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

৪। সিএনজি নেয়ার আগে ভাড়া ঠিক করে নিবেন।

৫। যদি আপনি খুব ভোরে গিয়ে শ্রীমঙ্গল পৌছান তাহলে সাথে সাথেই    ভ্রমণে যাওয়া ঠিক হবে না আপনার। সকাল হওয়ার জন্য সময় দিন। বলাতো যায় না এই গহীন জঙ্গলে কারা আপনার জন্য অনেক্ষা করছে।

৬। ভ্রমণে সবাই একসাথে কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন।

৭। বেশী গহীন জঙ্গলে প্রবেশ করবেন না।

৮। বন্য প্রাণী হতে সাবধান।

৯। বানর হতে তো অবশ্যই সাবধান।

১০। কোথায় কোথায় ভ্রমণে যাবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে নিন।

১১। শ্রীমঙ্গল আসলে শীতের কাপড় নিয়ে আসতে ভুলবেন না।

বিঃদ্রঃ


*আপনি যদি শ্রীমঙ্গল শহরটা পুরটা ঘুরতে চান তাহলে ৪দিন থাকতে পারেন।
*বাইক্কার বিল মাধবপুর-লেক ঘুরতে হলে হাতে একটু সময় বেশি রাখতে হবে।
*মাধবপুর-লেকের সৌন্দর্যের রফাদফা করেছে মানুষ।সবাই সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেয়ে সৌন্দর্য মলিন করে আসবেন না।

অনেকটা সময় এই শ্রীমঙ্গলের গল্প শুনে এখন কি আপনার দুই চোখে সারি সারি চা বাগানের দৃশ্য ভেসে উঠছে? তাহলে এখনই ব্যাগ গোছানো শুরু করে দিন। এই ছুটির বাকি কটা দিন না হয় কাটিয়ে দিন শ্রীমঙ্গলেই!

ব্লগটি ভাল লাগলে আপনার সেয়ার করেন   মুল্যবান মতামত দিন


No comments

Powered by Blogger.